নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতের রফতানি নিষেধাজ্ঞার মধ্যে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো চাল মজুত করার চেষ্টা করলে দেশের বাজার অস্থির হয়ে উঠতে পারে। এমনটাই আশঙ্কা করছেন চট্টগ্রামের চাল ব্যবসায়ী নেতারা। তবে পরপর দুই মৌসুম বোরো ও আমনের বাম্পার ফলনে বাংলাদেশে আপাতত চালের কোনো সংকট নেই।
সরেজমিনে চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী চাল বাজারে দেখা গেলো, চালবাহী ট্রাক, মিনি ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের সারি। দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মোকাম থেকে আনা চাল এখানকার গুদামে রাখা হচ্ছে। দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের বাজার চাক্তাই এলাকাতেও একই দৃশ্য।
বিভিন্ন মোকাম থেকে প্রতিদিন আড়াইশ থেকে তিনশ চালবাহী গাড়ি আসছে এসব বাজারে। যে কারণে ভারতের চাল রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞাকে তেমন সংকট হিসেবে দেখছেন না মাঠ পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা।
আগে বাংলাদেশ ২২ থেকে ২৫ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানি করলেও এখন তা ৮ থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টনে নামিয়ে আনা হয়েছে। এদিকে, গত বছর তিন মৌসুমে বাংলাদেশে প্রায় চার কোটি মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হয়েছে।
কাজেই দেশের বিভিন্ন মোকামে যথেষ্ট পরিমাণে চাল মজুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের পাহাড়তলী বণিক সমিতির সহ—সভাপতি জাফর আলম।
আরেক চাল ব্যবসায়ী চট্টগ্রামের পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রেজা খান বলেন, ‘খাদ্য মজুতের বিপরীতে আমাদের খাদ্যমন্ত্রী একটি আইন পাস করিয়েছেন। আমরা যদি সেই আইন মেনে চলি, তাহলে দেশের চালের বাজারে ভারতের রফতানি নিষেধাজ্ঞার কোনো প্রভাব পড়বে না। খাদ্যেরও ঘাটতি হবে না। সরকারের কাছে অনেক চাল রয়েছে।’
আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে দেশে পর পর আমন এবং বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। সদ্যবিদায়ী বোরো মৌসুম এবং হাওড়ের ধান বাজারে চলে আসায় পর্যাপ্ত চালের মজুত সৃষ্টি হয়েছে। ফলে গত দুমাস ধরেই স্থিতিশীল রয়েছে দেশের চালের বাজার।
তবে গত কয়েক বছর ধরে বেশ কয়েকটি করপোরেট প্রতিষ্ঠান এবং শিল্পগ্রুপ চালের ব্যবসা করায় বাজারে সিন্ডিকেট প্রথা শুরু হয়ে গেছে। এসব প্রতিষ্ঠান বাজারের পরিবর্তে মোকাম থেকেই চাল সংগ্রহ করে। এমনকি কম শুল্কে আমদানি করা চাল প্রতিষ্ঠানগুলো কারসাজির মাধ্যমে বেশি দামে বিক্রি করেছিল বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এ অবস্থায় ভারতের এ নিষেধাজ্ঞার সুযোগে যাতে করপোরেট হাউজগুলো কোনো রকম চাল মজুত করতে না পারে সে লক্ষ্যে প্রশাসনের তদারকির কথা বলছেন চট্টগ্রাম চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজম। তিনি বলেন, এ ধরনের করপোরেট মিলাররা বড় ধরনের ধান মজুত করে রাখেন। সরকারকে তাদের দিকে নজরদারি করতে হবে যাতে করে তারা ভারতের এ রফতানি বন্ধের সুযোগ না নিতে পারে।