৯০ দশকের শুরুতে বিশেষ করে স্নায়ুযুদ্ধের পরিসমাপ্তির পর থেকে বিশ্ব রাজনীতিতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পটপরিবর্তন হয়েছে। সংস্কৃতি ও বৈজ্ঞানিক উৎকর্ষের বর্তমান বাস্তবতায় বিশ্ব রাজনীতি পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন দিগন্ত সূচনা করছে। সেই সূচনা কোন দেশের জন্য মঙ্গলজনক, আবার কোন দেশের জন্য চরম বিভীষিকাময়। এমনি বাস্তবতায় বিশ্বের পরাশক্তি রাষ্ট্রগুলো আধিপত্য বজায় রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে।
এই অবস্থার নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলা করতে হচ্ছে নিম্ন, নিম্নমধ্যম আয় ও উচ্চমধ্যম আয়ের রাষ্ট্রগুলোকে। অঞ্চলভেদে রাজনীতি বিভিন্ন পরিক্রমায় পরিচালিত হচ্ছে, যা রাষ্ট্রীয় সীমানা পেরিয়ে বিশ্বজুড়ে পরিব্যপ্ত হচ্ছে। এমন সময়ে এসে বাংলাদেশের ছাত্রজনতাকে জীর্ণ আর সেকেলে রাজনীতিকে বিদায় দিয়ে আগামীর স্মার্ট ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ বিনির্মাণে পেশিশক্তি নয় মেধা ও মনন ভিত্তিক ছাত্ররাজনীতির চর্চা করার রক্ত শপথ গ্রহণ করতে হবে।
একজন ছাত্রকে ভালো ছাত্র হওয়ার পাশাপাশি তার মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা থাকাটা জরুরী। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পাঠ্যগত শিক্ষা প্রদান করলেও তেমনভাবে তাদের রাজনৈতিক বিষয়ে সচেতন করে গড়ে তুলতে পারেনা। দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তে সুস্থ সুন্দর রাজনৈতিক চর্চা হলেও জেলা এবং মফস্বল শহরগুলোতে এরুপ রাজনৈতিক চর্চা কম হয়ে থাকে। যুগে – যুগে শিল্পে -বিপ্লবে এবং সংস্কৃতিতে পরিবর্তন এসেছে যা রাজনৈতিকভাবেও পরিবর্তন এনে দিয়েছে।
বর্তমান আধুনিক যুগে রাজনীতিতেও আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। আমাদের দেশের তরুণ প্রজন্মকে প্রযুক্তিনির্ভর দেশগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি রাজনীতিগত দিক দিয়েও দক্ষ হয়ে উঠতে হবে।
এদেশের তরুণ প্রজন্মের বড় একটি অংশ রাজনীতিকে ঘৃণ্য পেশার চোখে দেখছে যা রাজনীতিবিদদের অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখার বিষয়। শিক্ষিত এবং মেধাবী ছাত্ররা যদি ছাত্র রাজনীতিতে আসে তবেই রাজনীতি আরো সুন্দর এবং সাফল্যমণ্ডিত হবে। স্বদেশ প্রেমে উদ্ভোদ্ধ হয়ে তারাই এ দেশের ক্রান্তিলগ্নে মেধা ও মননের মাধ্যমে সুফল বয়ে আনবে। বিভাগীয় শহরগুলোতে রাজনৈতিক চর্চা অব্যাহত আছে তবে জেলা শহরগুলোতে তুলনামূলক কম। জেলাগুলো থেকে মেধাবী শিক্ষার্থীরা রাজনীতিতে অংশ নিলে রাজনীতি আরো বেশি স্বচ্চ এবং অংশিদারমূলক হবে। তবে রাজনৈতিক চর্চা হতে হবে মেধাভিত্তিক । স্মার্ট এবং যুগোপযোগী রাজনীতি ব্যাক্তি,পরিবার সমাজ তথাপি সমগ্র দেশের জন্যে সুফল বয়ে আনবে। সর্বোপরী ছাত্ররাজনীতি হওয়া উচিত আশির্বাদমূলক। ছাত্ররাজনীতি করা ছেলেটি যেন দিনশেষে পরিবারের বোঝা নয় বরং পরিবারের সুখ -সমৃদ্ধি বয়ে আনতে পারে। রাজনীতিতে সক্রিয়তার পাশাপাশি অবশ্যই ভালো ছাত্র হতে হবে এবং ক্যারিয়ার গড়ার সংগ্রামে লিপ্ত থাকতে হবে। রাজনীতি যেন কোনভাবেই ব্যাক্তিগত ক্যারিয়ার গড়ার প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে না পারে।
আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে স্মার্ট নেতৃত্বের শুভ সূচনা হোক।
চিঠিপত্র:
শুভ সরকার