চাঁদপুর সংবাদদাতা: হাইমচরে ছেলে আরিফ হোসেনকে (২৫) হত্যার দায়ে প্রেমিকসহ মা খুকি বেগমকে (৪৩) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। এ হত্যাকাণ্ডে সহযোগী আরো দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (১) ফারহানা ইয়াসমিন এই রায় ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
হত্যার শিকার আরিফ হোসেন জেলার হাইমচর উপজেলার দক্ষিণ আলগী ইউনিয়নের মাছুম খান বাড়ির মিজানুর রহমান খানের ছেলে।
মামলার এজহার থেকে জানা যায়, নিহত আরিফ হোসেন তার মায়ের সঙ্গে আসামি জয়নাল গাজীর পরকীয়ার কথা জানলে মা—ছেলের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। ২০১৫ সালের শুরুতে ছেলে আরিফ হোসেন প্রেমের সম্পর্ক করে পার্শ্ববর্তী উত্তর আলগী ইউনিয়নের মিজি বাড়ীর আব্দুস সালাম মিজির মেয়ে আসমা আক্তারকে (১৯) বিয়ে করেন। তাদের বিয়ে মা খুকি বেগম প্রথমে মেনে না নিলেও একপর্যায়ে মেনে নেন। এরপর মা, ছেলে ও ছেলের বউয়ের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে ঝগড়া বিবাদ হতো। এরই মধ্যে মা খুকি বেগম ছেলেকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তারই আলোকে ২০১৫ সালের ১৬ নভেম্বর ছেলের বউ আসমাকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন। এরপর ১৮ নভেম্বর পরিকল্পিতভাবে মা খুকি বেগম নিজ গৃহে পরকীয়া প্রেমিক জয়নাল গাজী ও সহযোগীদের দিয়ে আরিফকে ঘুমন্ত অবস্থায় হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে, দা দিয়ে কুপিয়ে এবং ব্লেড দিয়ে পোছ মেরে গুরুতর আহত করে ঘরের মেঝেতে ফেলে চলে যান।
পরদিন ১৯ নভেম্বর সকালে খুকি বেগম আরিফের স্ত্রী আসমাকে ফোন করে জানান ডাকাতরা আরিফকে জখম করে ফেলে গেছে। আসমা তাৎক্ষণিক স্বামীর বাড়িতে এসে আরিফকে প্রথমে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে মতলব ফেরিঘাট পার হওয়ার পর সকাল ৯টার দিকে আরিফের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ওইদিনই আসমা শাশুড়ি খুকি বেগমসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হাইমচর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।