আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অর্থনৈতিক সংকটের কারণে পাকিস্তান সরকার দেশটির দোকানপাট ও শপিংমল দ্রুত বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। খবর বিবিসির।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জানান, এই পদক্ষেপের ফলে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ পাকিস্তান প্রায় ৬২ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি সঞ্চয় হবে।
ক্ষমতাসীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএলএন) দল টুইটারে জানায়, জ্বালানি সাশ্রয়ের এই পরিকল্পনায় মন্ত্রিসভা দ্রুত অনুমোদন দিয়েছে।
পাকিস্তান নিজ দেশের বেশিরভাগ শক্তি উৎপন্ন করে আমদানি করা জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে। গত বছর বৈশ্বিক বাজারে তেলের দাম লাফে লাফে বৃদ্ধির ফলে দেশটিতে অর্থনৈতিক চাপ আরও বেড়েছে। এ মুহূর্তে জীবাশ্ম জ্বালানি আমদানির জন্য পাকিস্তানের আরও বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজন, বিশেষ করে মার্কিন ডলার।
অর্থনীতির তত্ত্ব অনুযায়ী, একটি দেশের তিন মাসের আমদানির খরচের সমমানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অবশ্যই থাকতে হয়। গত বছর পাকিস্তানের রিজার্ভ প্রায় ৫০ শতাংশ হ্রাস পায়। আর গত মাসে এর পরিমাণ কমে দাঁড়ায় মাত্র ১১ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। এ পরিমাণ রিজার্ভ দেশটির সব আমদানি খরচের মাত্র এক মাসের মূল্য পরিশোধ করতে সক্ষম। আর অবশিষ্ট রিজার্ভের বেশিরভাগই বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে ব্যয় হবে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আসিফ গত মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টার পর কোনো দোকান ও শপিংমল খোলা রাখা যাবে না। এ ছাড়া সরকারি অফিসগুলোতেও বিদ্যুতের ব্যবহার ৩০ শতাংশ কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জুলাইয়ের শুরু থেকে বেশি বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় এমন বৈদ্যুতিক পাখা উৎপাদনও নিষিদ্ধ করা হবে।
২২ কোটি মানুষের দেশ পাকিস্তান তার অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে বছরের পর বছর ধরে সংগ্রাম করে যাচ্ছে। গুরুতর অর্থনৈতিক সংকটে থাকা দেশটিকে ২০১৯ সালে বেল-আউট প্যাকেজের অধীনে ৬ বিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা দেয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। গত বছরের আগস্টে আইএমএফের কাছ থেকে আরও ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার সাহায্য নেয় দেশটি।
গত বছর ভয়াবহ বন্যার কারণে পাকিস্তান অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির মুখোমুখি হয়। অক্টোবরের ওই বন্যার কারণে পাকিস্তানে প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করে বিশ্বব্যাংক।