নিজস্ব প্রতিবেদক: তিন ফসলি জমিতে কোনো অবকাঠামো নির্মাণ করতে হলে ইউনিয়ন পরিষদের অনুমোদন নিতে হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, এরইমধ্যে পরিপত্র জারি করে এ সংক্রান্ত ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তিন ফসলি জমি আমরা নষ্ট করতে দেবো না। তবে গ্রামকেও যাতে পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন করা যায়, সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) এক আলোচনা সভা ও সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ‘জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস’ পালনে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের পর সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, শহরে অবকাঠামো নির্মাণ করতে হলে সিটি করপোরেশন ও রাজউক থেকে অনুমোদন নিতে হয়। তেমনি পৌরসভা এলাকায় অনুমতির দরকার পড়ে। গ্রামেও তিন ফসলি জমিতে অবকাঠামো নির্মাণে ইউনিয়ন পরিষদের অনুমোদন লাগবে।
তিনি বলেন, যদিও সেখানে (ইউনিয়ন পরিষদ) গেলে হয়রানির শিকার হতে হয়। এছাড়াও যোগ্য প্রকৌশলী নেই। এমন বিভিন্ন অভিযোগ জনগণের আছে, যা আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। কাজ করতে গেলে কিছু চ্যালেঞ্জ আসবেই। সবার সহযোগিতায় তা মোকাবিলা করতে হবে।
স্থানীয় সরকার দিবস পালনে কোনো তারিখ নির্দিষ্ট করা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস উদযাপনে ২৫ সেপ্টেম্বরের কথা বলা হয়েছে। তবে এ দিন পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। যে কারণে এখন নিশ্চিত করে বলছি না। এটিকে ‘খ’ শ্রেণির দিবস হিসেবে পালন করা হবে। এ দিবসে সরকারি ছুটি থাকবে না। ‘ক’ শ্রেণির দিবসগুলোতে সরকারি ছুটি থাকে।
তবে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস গুরুত্ব দিয়ে পালন করা হবে জানিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা একটি খসড়া গাইডলাইনও তৈরি করেছি। যেহেতু আমরা দিবসটি পালনে মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেয়েছি, সেহেতু আমরা গাইডলাইন চূড়ান্ত করবো। এরমধ্য দিয়ে আমরা যোগাযোগ ও উন্নয়নে বড় ধরনের রূপান্তর করতে পারবো।
তিনি বলেন, জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস হিসেবে আমাদের প্রথম প্রস্তাব ছিল ১৬ জানুয়ারি। কিন্তু আগামী বছর জানুয়ারি মাসে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কাজেই আমরা একটি দিবস ঘোষণার পর নির্বাচনের কারণে যদি প্রথমবার পালন করতে না পারি, তাহলে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। যে কারণে দিবসটি সেপ্টেম্বর মাসে নিয়ে আসার জন্য প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুয়েক দিনের মধ্যে চূড়ান্ত করতে পারবো।
মন্ত্রী আরও বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে দিবসটি পালনের নির্দেশনা থাকবে। জনগণকে সম্পৃক্ত করতে কাউন্সিলরদেরও নির্দেশনা দেওয়া থাকবে।
স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত রাখা এবং জনমুখী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে এ দিবস পালন করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, অধিকতর জনসম্পৃক্ততার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক এবং আর্থিকভাবে স্বনির্ভরতা অর্জনের পথ সুগম হবে। দিবস পালন করলে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর যেসব অংশীজন বা সুবিধাভোগী রয়েছেন, তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সহজ হবে। এ কার্যক্রমে জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধির ফলে সেবা সহজীকরণে সহায়ক হবে।
তাজুল ইসলাম বলেন, সার্বিকভাবে ‘জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস’ পালনে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে তৃণমূল পর্যায়ের জনসাধারণের সম্পৃক্ততা আরও বাড়বে। এতে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহি, কর্মতৎপরতা, গুরুত্ব ও সর্বোপরি সক্ষমতা প্রকাশ পাবে।
তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের ব্যাপ্তি ইউনিয়ন পরিষদের গণ্ডি পেরিয়ে ওয়ার্ড পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার দিবস উদযাপনে প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনপ্রতিনিধি এবং জনগণের সম্পৃক্তার প্রয়োজন রয়েছে। বর্তমান সরকার সেবা সহজীকরণ এবং জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছানোর জন্য বদ্ধপরিকর।