নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদারের পাশাপাশি রাজনৈতিক সম্পর্কও গভীর করতে চায় দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটির প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের ভবিষ্যৎ কৌশলবিষয়ক বিশেষ দূত জ্যাং সুং মিন ঢাকা সফর শেষে বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট অফিসের প্রভাবশালী এই কর্মকর্তা বলেন, দুদেশের সম্পর্ক দৃঢ় করার জন্য রাজনৈতিক পর্যায়ে আরও যোগাযোগ ও সহযোগিতা বাড়াতে হবে। দেশটির প্রেসিডেন্টের এই বার্তা নিয়ে তিনি বাংলাদেশ সফরে এসেছেন বলে জানান। এজন্য দুদেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফরের প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে নিজের সফরকে সম্পর্কের নতুন সূচনা হিসেবে অভিহিত করে জ্যাং বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের বিষয় কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা চলছে। তবে আগামী নির্বাচনের আগে ভিভিআইপি সফর কঠিন হবে।’
মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশে নেমেই জ্যাং সুং মিন ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। আজ সকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে এবং দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এরপর বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে তিনি সংবাদ সম্মেলনে সফরের বিস্তারিত জানান। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ঢাকায় নিযুক্ত দক্ষিণ কোরীয় রাষ্ট্রদূত লি জং কিউন, দেশটির রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের মহাপরিচালক ইয়ো চাং হোসহ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টকে নীতি প্রণয়নে সহায়তাকারী এই বিশেষ দূত বলেন, ‘চলতি বছর ঢাকা-সিউল কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তিতে সর্বোচ্চ পর্যায়ে সহযোগিতা বাড়াতে চাই। দুই দেশের সম্পর্ক শক্তিশালী করতে চাই। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আমাকে এখানে পাঠিয়েছেন। গত ৫০ বছরের সম্পর্কের অভিজ্ঞতায় আমরা পরবর্তী ৫০ বছরের দিকে তাকাতে চাই।’
বহুমুখী খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সিউল ঢাকার সঙ্গে তার সম্পর্ককে আরও উচ্চতর পর্যায়ে উন্নীত করতে চায় জানিয়ে জ্যাং সুং মিন বলেন, ‘কোরিয়া ও বাংলাদেশ উভয়েই স্বাধীনতার জন্য কঠিন সংগ্রাম করেছে। সে কারণে আমাদের অনেক সামঞ্জস্য রয়েছে। আমাদের রাষ্ট্রপতি জানেন দুই দেশেরই অর্থনীতি সমৃদ্ধ হচ্ছে এবং দুই দেশের কনজুমার মার্কেটও অনেক বড় হচ্ছে। তাই আমরা একযোগে কাজ করতে চাই।’
এক প্রশ্নের উত্তরে কোরিয়ার বিশেষ দূত বলেন, ইয়ং ওয়ান কোম্পানির জমি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। আশা করি দ্রুত এর সুরাহা হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে বিশেষ দূত বলেন, ‘কোরিয়া কর্মীদের মানবাধিকারে প্রাধান্য দেয়। তবে অন্য দেশের তুলনায় কোরিয়ায় সু্যোগ সুবিধা বেশি বলে কোরিয়ায় যেতে অনেকেই আগ্রহী। কোরিয়ানরা বাংলাদেশি কর্মীদের পরিবারের সদস্য মনে করে। তবে করোনার কারণে সেখানে আপাতত বিদেশি কর্মীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে গেছে।’
প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন খাতে দক্ষিণ কোরিয়ার অগ্রগতি অনেক বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, এসব ক্ষেত্রে আমরা দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে পারি।’