নিউজ ডেস্ক: আসন্ন ঈদুল আজহার সময়টাতে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী (এলজিআরডি) তাজুল ইসলাম।
প্রতিকার হিসেবে তিনি বলেন, এজন্য সিটি করপোরেশনের নিবিড়ভাবে মশক নিধনের জন্য যেসব টিম আছে, সেই টিমকে কাজে লাগাতে হবে।
তাদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ কীটনাশক ওষুধ রাখা আছে, সেগুলো ব্যবহার করবে। পর্যাপ্ত সংখ্যক যন্ত্র কেনা আছে। একেকটি সিটি করপোরেশনে তিন হাজার করে লোকবল নিয়োগ দেওয়া আছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) সচিবালয়ে ডেঙ্গুসহ মশা বাহিত রোগ প্রতিরোধে এক সমন্বয় সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ঢাকা শহর এবং দেশবাসীর উদ্দেশ্যে এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, ঈদের সময় আঙ্গিনায় কুরবানির বর্জ্য পরিষ্কার করে নেবেন। বাড়ির ছাদ এবং এয়ারকন্ডিশন ও ফ্রিজের নিচে যেন পানি জমে না থাকে। খাটের নিচে যেন পানি জমে না থাকে। ঈদে বাড়ি গেলে কমোডের ঢাকনা বন্ধ করে যাবেন। টায়ার, টিউবসহ যেসব জায়গায় পানি জমে থাকতে পারে, সেখানে এডিস মশার জন্য হতে পারে, সেসব জায়গায় যেন পানি জমতে না পারে। কারণ, তিন দিনের জমা পানিতে এডিস মশার ডিম থেকে লার্ভার জন্ম হয়। তিন দিনের মধ্যে যদি জমে থাকা পানি ফেলে দিই, তাহলে এডিস মশা থেকে রক্ষা পেতে পারি।
তাজুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু নিয়ে সন্তুষ্টির কোনো কারণ নেই। একজনও যদি আক্রান্ত না হতো, একজন লোকও যদি মারা না যেতো, তাহলে আমি সন্তুষ্ট হতাম। আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করি। একটা লোকেরও যেন মৃত্যু না হোক, আর আক্রান্ত না হোক। কিন্তু অসন্তুষ্টি নিয়ে তো আমাদের বসে থাকলে চলবে না, আমাদের কাজ করতেই হবে।
মন্ত্রী জানান, ১ জানুয়ারি থেকে ২১ জুন পর্যন্ত সারা দেশে ৫ হাজার ৯২৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। ডেঙ্গুতে সারা দেশে মারা গেছেন ৩৮ জন। ঢাকায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ঢাকায় ২৯ জন এবং ঢাকার বাইরে নয় জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে চট্টগ্রামে ৬ জন, বরিশালে দুই জন ও ময়মনসিংহে একজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
তবে ডেঙ্গু ছাড়া এদের অন্য কোনো রোগ ছিল কিনা, সে বিষয়টাও যাচাই করতে হবে জানিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন কিনা, আগে থেকেই মৃত্যুপথযাত্রী ছিলেন কিনা- এগুলো নজরে আনতে হবে। আমাদের জানতে হবে, কোথায় ঘাটতি আছে। আমরা জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ। আমরা জনগণকে অঙ্গীকার করেছি, ভালোভাবে জীবনযাপনের জন্য আমরা সম্ভাব্য সব সুযোগগুলো কাজে লাগাবো।
অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থা অনেক ভালো জানিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, সিঙ্গাপুরে ৩ হাজার ৫৯৫ জন আক্রান্ত হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ায় ৩৫ হাজার আক্রান্ত হয়েছে। আমরা নিয়ন্ত্রণ করার সর্বাত্মক চেষ্টা করার পরিপ্রেক্ষিতে এখন যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে আছে। ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে দুই লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। সেই তুলনায় কি কমাতে পেরেছি বলে মনে হয় না? কোথাও যদি ঘাটতি থাকে, কেউ তা ধরিয়ে দিলে সেটিকেও আমলে নেবো।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মশা নিধনের জন্য যতগুলো অপশন রয়েছে, তার সবগুলো কাজে লাগানো হচ্ছে। টেলিভিশনের মাধ্যমে টিভিসি প্রচার করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয় ও সিটি করপোরেশনে সেল গঠন করা হয়েছে, সেখানে কেউ কোনো পরামর্শ দিলে, তাও আমলে নেওয়া হবে।
আশেপাশের খালে ময়লা-আবর্জনা নেই- এ কথা দাবি করতে পারবেন না জানিয়ে এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, সাধারণত এডিস মশার জন্ম খালে হয় না। আঙিনা বা যেখানে কংক্রিটের স্তর আছে, সেখানে পরিষ্কার পানি থাকলে এই মশার জন্ম হয়।