নিজস্ব প্রতিবেদক: ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা দেরিতে হাসপাতালে আসায় মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
বৃহস্পতিবার ঢাকার এফডিসিতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে নাগরিক সচেতনতা নিয়ে এক ছায়া সংসদে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম এসব কথা বলেন। ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট শিরোনামে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা দেরিতে হাসপাতালে আসায় মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৬ হাজার, অথচ এবছর ইতোমধ্যেই প্রায় ১৮ হাজার ছাড়িয়েছে। ডেঙ্গুর বর্তমান পরিস্থিতিতে জরুরি অবস্থা জারি অথবা মহামারি ঘোষণা করার মতো কোনো অবস্থা ঘটেনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ডেঙ্গুতে অসহায় পরিবোরের উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুতে জরিমানায় আদায়কৃত অর্থ ও সিটি করপোরেশনের বিশেষ তহবিল থেকে সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।
মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ডিএমসি ও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থেকে স্থান না থাকার কথা বলে ডেঙ্গু রোগী ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ খাতিয়ে দেখা হবে। বেসরকারি সকল হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার এনএস—১ টেস্ট ফি ৩ শত, আইজিজি টেস্ট ফি ৩ শত, আইজিএম টেস্ট ফি ৩ শত ও সিবিসি টেস্ট ফি ৪ শত টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যান্য টেস্ট ফি, বেড ভাড়াসহ বিবিধ খরচ নির্ধারণে নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতালের মালিকরা এর জন্য একমাস সময় চেয়েছে। তবে শুধু আইন দিয়ে নয় মানবিক মূল্যবোধের মাধ্যমে বিবেকবান মানুষ হিসেবে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা উচিত।
সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, দেশের ৬৪টি জেলায় ইতোমধ্যে ডেঙ্গুর প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ঢাকায় এর প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি। রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন, শুধু বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে তৎপর থাকায় পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। ডেঙ্গু এখন সারা বছরের রোগ। ডেঙ্গু প্রতিরোধে বছরব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনা না করলে এর নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না। ডেঙ্গুর প্রকোপ এবার এত ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে, ২৩ বছরের রেকর্ড ভেঙে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। এর মধ্যে ১৭ জনই মারা গেছে ঢাকা সিটিতে। চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ১৪৬ জনে দাঁড়িয়েছে। অথচ ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বাড়ার শঙ্কা আগামী আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে। তখন পরিস্থিতি কী হবে তা ভাবতে ভয় হচ্ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে নাগরিক সম্পৃক্ততা খুবই জরুরি।